হিজড়া সম্প্রদায় বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার একটি ক্ষুদ্র অংশ। আবহমানকাল থেকেই এ জনগোষ্ঠী অবহেলিত ও অনগ্রসর। এ লক্ষ্যে এ জনগোষ্ঠীর মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ, তাদের জন্য সামাজিক ন্যায় বিচার নিশ্চিতকরণ, তাদের পারিবারিক, আর্থসামাজিক, শিক্ষা ব্যবস্থা, বাসস্থান, জীবনমান উন্নয়ন এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ সর্বোপরি তাদেরকে সমাজের মূল স্রোতধারায় এনে দেশের সার্বিক উন্নয়নে তাদের সম্পৃক্তকরণের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের আওতায় ২০১২-১৩ অর্থবছরে ‘হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি’ বাস্তবায়ন শুরু হয়। পরবর্তীতে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ২১ টি জেলায় তা সম্প্রসারণ করা হয়। ২০১৫-১৬ অর্থবছর হতে ৬৪টি জেলায় হিজড়া জনগোষ্ঠীর ভাতা, শিক্ষা উপবৃত্তি এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রতিবছরই এ কার্যক্রমের আওতায় উপকারভোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সমাজসেবা অধিদফতরের প্রাথমিক জরিপ মতে বাংলাদেশে হিজড়ার সংখ্যা প্রায় ১১ হাজার। ২০১৪ সালে ২২ জানুয়ারী বাংলাদেশ সরকার হিজড়া জনগোষ্ঠীকে ‘হিজড়া লিঙ্গ’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছে। ২০২১-২২ অর্থবছর হতে এ কর্মসূচির ভাতা ও শিক্ষা উপবৃত্তির নগদ সহায়তায় জিটুপি পদ্ধতিতে উপকারভোগীর মোবাইল হিসাবে প্রেরণ করা হচ্ছে।
কর্মসূচির সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যসমূহ
১. হিজড়া ব্যক্তিদের শনাক্তকরণ ও পরিচয়পত্র প্রদান;
২. হিজড়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষিত করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে শিক্ষা উপবৃত্তি প্রদান;
৩. প্রশিক্ষণের মাধ্যমে হিজড়া জনগোষ্ঠীর যুবাদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও আয়বর্ধনমূলক কর্মকান্ডে সম্পৃক্তকরণ;
৪. বয়স্ক হিজড়া জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও সামাজিক নিরাপত্তা বিধান;
৫. পরিবার ও সমাজে হিজড়া ব্যক্তিদের মর্যাদা বৃদ্ধি;
৬. আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে হিজড়া ব্যক্তিদের মনোবল জোরদারকরণ;
৭. হিজড়া জনগোষ্ঠীর কল্যাণ ও সামাজিক সুরক্ষায় সরকার কর্তৃক গৃহীত স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন লক্ষ্য অর্জনে ভূমিকা রাখা।
কার্যক্রম
হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে নিম্নবর্ণিত কার্যক্রম পরিচালিত হবে:
১. হিজড়া ব্যক্তিদের শনাক্তকরণ ও পরিচয়পত্র প্রদান;
২. ৫০ বছর বা তদুর্ধ্ব বয়সের দুঃস্থ ও অসচ্ছল হিজড়া ব্যক্তিকে মাসিক ৬০০ টাকা হারে বিশেষ ভাতা প্রদান।
৩. হিজড়া শিক্ষার্থীদের মাসিক হারে প্রাথমিক স্তরে ৭০০ টাকা, মাধ্যমিক স্তরে ৮০০ টাকা, উচ্চমাধ্যমিক স্তরে ১০০০ টাকা এবং উচ্চতর স্তরে ১২০০ টাকা হারে শিক্ষা উপবৃত্তি প্রদান;
৪. কর্মক্ষম হিজড়া ব্যক্তিকে প্রশিক্ষণ প্রদান, আর্থিক অনুদান প্রদান ও আয়বর্ধক কাজে নিয়োজিতকরণ;
৫. প্রশিক্ষণোত্তর এককালীন নগদ সহায়তা হিসেবে ১০,০০০ টাকা প্রদান।
বাস্তবায়ন কর্তৃপক্ষ
সমাজসেবা অধিদফতর অধীন বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়, জেলা সমাজসেবা কার্যালয় এবং উপজেলা ও শহর সমাজসেবা কার্যালয়সমূহের সাংগঠনিক কাঠামোতে বিদ্যমান জনবল এবং বিভাগ, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এবং জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় এ কর্মসূচির বিশেষ ভাতা, শিক্ষা উপবৃত্তি ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে।
কার্যক্রম বাস্তবায়ন নীতিমালা
হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন নীতিমালা ২০১৩
কার্যক্রম বাস্তবায়নের কৌশল
সমাজসেবা অধিদফতরের Management Information System (MIS) এ ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে বা সরাসরি আবেদনগ্রহণপূ্র্বক হিজড়া ব্যক্তির তথ্য যাচাই করে এ নীতিমালা অনুসরণপূর্বক প্রকৃত হিজড়া জনগোষ্ঠীর তালিকা প্রণয়ন করে বরাদ্দ অনুযায়ী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে G2P পদ্ধতিতে EFT এর মাধ্যমে মোবাইল একাউণ্টে/এজেন্ট ব্যাংকিং একাউণ্টে বিশেষ ভাতা বা শিক্ষা উপবৃত্তির অর্থ প্রেরণ করা হয়ে থাকে।
উপজেলাওয়ারী পরিসংখ্যান
ক্রঃ নং |
উপজেলার নাম |
উপকারভোগীর সংখ্যা (বিশেষ ভাতা) |
উপকারভোগীর সংখ্যা (শিক্ষা উপবৃত্তি) |
১ |
২ |
৩ |
৪ |
১ |
কানাইঘাট |
০ |
০ |
২ |
কোম্পানিগঞ্জ |
০ |
০ |
৩ |
গোয়াইনঘাট |
১ |
১৬ |
৪ |
গোলাপগঞ্জ |
১০ |
৮ |
৫ |
জকিগঞ্জ |
২ |
৭ |
৬ |
জৈন্তাপুর |
০ |
০ |
৭ |
দঃ সুরমা |
০ |
০ |
৮ |
ফেঞ্চুগঞ্জ |
০ |
০ |
৯ |
বালাগঞ্জ |
০ |
০ |
১০ |
বিয়ানীবাজার |
০ |
০ |
১১ |
বিশ্বনাথ |
০ |
০ |
১২ |
ইউসিডি |
১০ |
২ |
১৩ |
সদর |
০ |
০ |
১৪ |
ওসমানীনগর |
০ |
০ |
|
মোট |
২৩ |
৩৩ |
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS