সমন্বিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রম
পৃথিবীর অন্যান্য কল্যাণ রাষ্ট্রের ন্যায় বাংলাদেশ সরকারও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সুদৃঢ়করণের লক্ষ্যে দেশের দুস্থ, অবহেলিত, পশ্চাৎপদ, দরিদ্র, এতিম, প্রতিবন্ধী এবং অনগ্রসর মানুষের কল্যাণ ও উন্নয়নের লক্ষ্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে ব্যাপক ও বহুমুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। অনগ্রসর অংশ হিসেবে বর্তমান সরকার প্রতিবন্ধী ব্যক্তির প্রতি বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করছে। এ প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর একটি অংশ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী।
১৯৭৪ সালে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য সমন্বিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা হয়। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুরা যাতে শিক্ষার সুযোগ পায় এবং তুলনামূলকভাবে ব্যয়বহুল প্রাতিষ্ঠানিক কর্মসূচির পরিবর্তে স্থানীয় বিদ্যালয়ে চক্ষুষ্মান শিক্ষার্থীদের সাথে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় পড়াশুনা করতে পারে এবং নিজস্ব পরিবেশ ও অবস্থার সাথে তাল মিলিয়ে চলাফেরা করতে পারে সে উদ্দেশ্যে সমাজসেবা অধিদফতর ৬৪টি জেলায় ৬৪টি সমন্বিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। প্রতিটির আসন সংখ্যা ১০। সমন্বিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রম ও বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণী থেকে এসএসসি পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ৬৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৮টি আবাসিক এবং ৩৬টি অনাবাসিক প্রতিষ্ঠান, অনুমোদিত আসন সংখ্যা ৬৪০। আবাসিক প্রতিষ্ঠানসমূহের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে ভরণপোষণ, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, চিকিৎসা, চিত্তবিনোদন ও পুনর্বাসনের মাধ্যমে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করা হচ্ছে।
এ সকল প্রতিষ্ঠান থেকে নিম্নবর্ণিত সেবাসমূহ প্রদান করা হয় :
১. দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সমন্বিতভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা প্রদান;
২. ব্রেইল পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষাদানের ব্যবস্থাকরণ;
৩. বিনামূল্যে ব্রেইল বই ও অন্যান্য সহায়ক শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ;
৪. দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের থাকা-খাওয়াসহ হোস্টেল সুবিধা প্রদান; এবং
৫. দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের পুনর্বাসন এর ব্যবস্থা করা।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুরা যাতে শিক্ষার সুযোগ পায় এবং তুলনামূলকভাবে ব্যয় বহুল প্রাতিষ্ঠানিক কর্মসূচির পরিবর্তে স্থানীয় বিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় পড়াশুনা করতে পারে এবং নিজস্ব পরিবেশ ও অবস্থার সাথে খাপ খেয়ে চলা ফেরা করতে পারে, সে উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের সাথে সংযুক্ত করে ১৯৭৪ সালে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য সমন্বিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়। প্রতিটি কার্যক্রমে একজন করে বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ‘রিসোর্স শিক্ষক’ এর তত্ত্বাবধানে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুদেরকে ব্রেইল পদ্ধতিতে শিক্ষা দেয়া হয়।
সেবা প্রদানকারী অফিসের নাম
সমন্বিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রম, কালিঘাট, সিলেট। এটি একটি আবাসিক প্রতিষ্ঠান।
দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা / কর্মচারী
রিসোর্স শিক্ষক, সমন্বিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রম, কালিঘাট, সিলেট।
সেবা প্রদান পদ্ধতি (সংক্ষেপে)
প্রতিবছর জানুয়ারি মাসে আগ্রহী অভিভাবকদের নির্ধারিত ফরমে রিসোর্স শিক্ষক, সমন্বিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রম, সাপমারী, শেরপুর / উপপরিচালক, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়, শেরপুর বরাবর আবেদন দাখিল করতে হয়। সংশ্লিষ্ট রিসোর্স শিক্ষক প্রাপ্ত আবেদনপত্রের তালিকা প্রস্ত্তত করে ভর্তি কমিটির সভার মাধ্যমে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী নির্বাচন করেন। অতঃপর আবেদনকারীকে অবহিত করার মাধ্যমে ভর্তি সম্পন্ন করা হয়। ভর্তিকৃত শিশু নির্ধারিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্রেইল পদ্ধতিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষা লাভ করে এবং রিসোর্স শিক্ষক পাঠদান তদারকি করেন। ভর্তিকৃত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসন, খাদ্য এবং চিকিৎসা বিষয়ক সকল প্রকার ব্যয়ভার সমাজসেবা অধিদফতর থেকে নির্বাহ করা হয়।
প্রয়োজনীয় ফি/ট্যাক্স/আনুষঙ্গিক খরচঃ
বিনামূল্যে
প্রয়োজনীয় আইন বিধিঃ
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩
সেবা গ্রহীতা
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশু যাদের বয়স ৬ থেকে ১৬ বছর।
সেবা প্রদানের সময়সীমা
শিশু ভর্তির ক্ষেত্রে-আসন শূণ্য সাপেক্ষে আবেদন প্রাপ্তির পর সর্বোচ্চ ১ মাস
আবাসন ও ভরনপোষন- ভর্তির পর হতে এস এস সি পরীক্ষা পর্যন্ত।
বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিক্ষা, প্রশিক্ষণ এবং কর্মসংস্থানের জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়াধীন সমাজসেবা অধিদফতর ৮টি শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় পরিচালনা করছে। এ সকল বিদ্যালয়ে ছাত্রদের ইশারা ভাষা শিক্ষা প্রদানের পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষা প্রদান করা হয়।
সেবাদান কেন্দ্র
ক্রম |
প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা |
নিবাসীর ধরন |
অনুমোদিত আসন সংখ্যা |
ফোন নম্বর/ইমেইল আইডি |
১ |
বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়, পিএইচটি সেন্টার, সেকশন-১৪, মিরপুর, ঢাকা |
বালক |
১১০ |
মোসাঃ মাহিমা আক্তার জান্নাতি (তত্বাবধায়ক) ০২-৯০০৩৫৪০ ০১৭৯৮৮৩০১৯৪ ad.phtc.dhaka@dss.gov.bd |
২ |
বাক-শ্রবণ প্রতবন্ধী বিদ্যালয়, পিএইচটি সেন্টার, গোয়ালখালী, খুলনা |
মিশ্র |
৮০ |
মোঃ আবিদ হাসান (তত্বাবধায়ক) ০৪১-৭৬২৯৯৭ ০১৭১৭৫৭১৩৮২ ad.phtc.khulna@dss.gov.bd |
৩ |
বাক-শ্রবণ প্রতবন্ধী বিদ্যালয়, পিএইচটি সেন্টার, মুরাদপুর, চট্টগ্রাম |
মিশ্র |
৮০ |
মোঃ কামরুল পাশা ভূঁইয়া (তত্বাবধায়ক) ০৩১-৬৫৫৭২৯ ০১৫৫৪৩৪৩১৯৮ ad.phtc.chittagong@dss.gov.bd |
৪. |
বাক-শ্রবণ প্রতবন্ধী বিদ্যালয়, পিএইচটি সেন্টার, ষষ্ঠীতলা, রাজশাহী |
মিশ্র |
৮০ |
মোঃ তৌহিদুজ্জামান (তত্বাবধায়ক) ০৭২১-৭৭২৭৫৮ ০১৭৩১৮৭৭৬০৫ ad.phtc.rajshahi@dss.gov.bd |
৫. |
সরকারি বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়, ফরিদপুর |
মিশ্র |
১০০ |
কাজী কাউছার উদ্দিন (প্রধান শিক্ষক) ০৬৩১-৬৪০০৮ ০১৭৫৭৯৯৪৪৪২ hm.shi.faridpur@dss.gov.bd |
৬. |
সরকারি বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়, বাবুরহাট, চাঁদপুর |
মিশ্র |
১০০ |
মনিরুল ইসলাম (প্রধান শিক্ষক) ০৮৪১-৬৫৮২৯ ০১৭৫১৯৯৫০৮৪ hm.shi.chandpur@dss.gov.bd |
৭. |
সরকারি বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়, শেখঘাট, সিলেট |
মিশ্র |
১০০ |
মোঃ হাবিবুর রহমান (প্রধান শিক্ষক ২৮৩৩৮৮০ ০১৭৪২৬২৯৮৭৪ hm.shi.sylhet@dss.gov.bd |
৮. |
সরকারি বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়, ঝিনাইদহ |
মিশ্র |
১০০ |
তরিকুল ইসলাম (প্রধান শিক্ষক) ০১৭১৮১৪৬৯৫৫ hm.shi.jhenidah@dss.gov.bd |
|
|
সর্বমোট |
৭২০ |
সেবা গ্রহীতাঃ
* শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিশু যাদের বয়স ৬ থেকে ১৬ বছর।
যে সকল সেবা প্রদান করা হয়ঃ
* বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী ছাত্র/ছাত্রীদের সাইন ল্যাংগুয়েজ শিক্ষা;
* বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী ছাত্র/ছাত্রীদের সাধারণ শিক্ষা;
* বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী ছাত্র/ছাত্রীদের আবাসিক/অনাবাসিক থাকার ব্যবস্থা ও ভরণ-পোষন;
* বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ; চিকিৎসা সেবা, খেলাধুলা, চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা করা;
* বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী ছাত্র/ছাত্রীদের পুনর্বাসন।
সেবা প্রদান পদ্ধতি (সংক্ষেপে):
আগ্রহী অভিভাবকদের নির্ধারিত ফরমে বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বরাবর আবেদন দাখিল করতে হয়। সংশ্লিষ্ট প্রধান শিক্ষক প্রাপ্ত আবেদনপত্রের তালিকা প্রস্তুত করে ভর্তি কমিটির সভার মাধ্যমে বাক শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হয়। এ সকল প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ভরণ-পোষণসহ দক্ষ মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে শিক্ষার পাশাপাশি বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয় ।
কার্যাবলি:
* অভিভাবক কর্তৃক নির্ধারিত ফর্মে আবেদন;
* ভর্তি কমিটি কর্তৃক আবেদন বাছাই ও চুড়ান্ত অনুমোদন;
* ভর্তি কমিটি কর্তৃক চূড়ান্ত অনুমোদন ও বিদ্যালয়ে ভর্তি।
নাগরিকদের অংশগ্রহণের ক্ষেত্র:
* প্রতিবছর জানুয়ারি মাসে শিশু ভর্তির জন্য নির্ধারিত ফরমে অভিভাবক কর্তৃক শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদন;
* কার্যক্রম পরিচালনায় কোন ব্যত্যয় পরিলক্ষিত হলে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা;
* প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সহায়তা করা;
* প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শিক্ষার গুণগতমান উন্নয়নে যে কোন সহযোগিতা;
* প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের পুনর্বাসনে আর্থিক ভাবে, চাকুরী প্রদানের মাধ্যমে বা তথ্য সরবরাহের মাধ্যমে সহযোগিতা করা;
* প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের প্রতি সহমর্মি আচরণ করা।
সেবা প্রদানের সময়সীমা:
* শিশু ভর্তি- আসন শূণ্য সাপেক্ষে আবেদন প্রাপ্তির পর সর্বোচ্চ ১ মাস
* আবাসন ও ভরনপোষন-ভর্তির পর এস এস সি পরীক্ষা পর্যন্ত
যার সাথে যোগাযোগ করতে হবে:
* প্রধান শিক্ষক, বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস